জুন্দাব রাদিয়াল্লাহু ‘আনহু থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, নবী সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন:
“যে ব্যক্তি তার কৃতকর্মের সুনাম লোক সমাজে প্রচার করে বেড়ায়, আল্লাহ্ কেয়ামতের দিন তার কৃত কর্মের প্রকৃত উদ্দেশ্যে লোকদেরকে জানিয়ে ও শুনিয়ে দিবেন। আর যে ব্যক্তি লোক দেখানোর উদ্দেশ্যে এ কাজ (সৎকাজ) করবে, আল্লাহ্ কেয়ামতের দিন তার প্রকৃত উদ্দেশ্যের কথা লোকদের মাঝে প্রকাশ করে দিবেন।”
[বুখারী: ৬৪৯৯]
সেদিন আল্লাহ ও বান্দার মধ্যে কোন দোভাষী থাকবে না
সেদিন আল্লাহ তাআলা তার বান্দার সাথে সরাসরি কথা বলবেন। কোনো মাধ্যমের প্রয়োজন হবে না। হাদীসে এসেছে
عن عدي بن حاتم رضي الله عنه قال: قال رسول الله صلى الله عليه وسلم: ما منكم من أحد إلا سيكلمه ربه ليس بينه وبينه ترجمان ، فينظر أيمن منه فلا يرى إلا ما قدم من عمله ، وينظر أشأم منه فلا يرى إلا ما قدم ، وينظر بين يديه فلا يرى إلا النار تلقاء وجهه ، فاتقوا النار ولو بشق تمرة ) .
আদী ইবনে হাতেম রা. বলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন: তোমাদের মধ্যে প্রতিটি ব্যক্তি সেদিন আল্লাহ তাআলার সাথে সরাসরি কথা বলবে। কোন দোভাষী বা মধ্যস্থ থাকবে না। মানুষ তখন তার ডান দিকে তাকাবে দেখতে পাবে শুধু তাদের প্রেরিত কর্ম। আর বাম দিকে তাকাবে দেখবে শুধু নিজ কৃত কর্ম। সামনের দিকে তাকাবে দেখবে শুধু জাহান্নামের আগুন। কাজেই তোমরা আগুন থেকে সাবধান হও নিজেদের বাঁচাও যদি একটি খেজুরের টুকরা দান করার বিনিময়েও হয়। (বর্ণনায়: বুখারী)
এ হাদীসটি থেকে আমরা যা শিখতে পারলাম:
এক. সামান্য নেক আমলেরও অবজ্ঞা করা উচিত নয়। সুযোগ আসা মাত্রই যে কোন নেক আমল করা উচিত। কেহ যদি একটি খেজুরের অংশ দান করার সুযোগ পায় তাহলে তা দান করে হলেও আল্লাহ তাআলার শাস্তি ও জাহান্নামের আগুন থেকে বাঁচার চেষ্টা করা উচিত।
সেদিন প্রথম যে বিষয়টির হিসাব নেয়া হবে
সেদিন প্রথম যে বিষয়টির হিসাব নেয়া হবে তা হল, নামাজ। যদি এটি শুদ্ধভাবে কবুল হয় তবে তার সকল আমল শুদ্ধ বলে ধরা হবে। আর যদি এট বরবাদ হয়ে যায় তখন সকল আমলই বরবাদ হয়ে যাবে।
হাদীসে এসেছে :
আনাস ইবনে হাকীম আদ-দবী যিনি যিয়াদ অথবা ইবনে যিয়াদের ভয়ে মদীনাতে এসেছিলেন ও আবু হুরাইরা রা. এর সাথে সাক্ষাত করলেন, তিনি বলেন, হে যুবক! আমি কি তোমাকে একটি হাদীস শুনাবো? আমি বললাম, অবশ্যই শুনাবেন। আল্লাহ আপনার প্রতি রহম করুন! তিনি বললেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন :
إن أول ما يحاسب الناس به يوم القيامة من أعمالهم الصلاة قال يقول ربنا جل وعز لملائكته وهو أعلم انظروا في صلاة عبدي أتمها أم نقصها فإن كانت تامة كتبت له تامة وإن كان انتقص منها شيئا قال انظروا هل لعبدي من تطوع فإن كان له تطوع قال أتموا لعبدي فريضته من تطوعه ثم تؤخذ الأعمال على ذاكم . رواه أحمد وأبو داود.
মানুষের আমলের মধ্যে প্রথম যে বিষয়টির হিসাব নেয়া হবে তাহল, নামাজ। আমাদের প্রতিপালক আল্লাহ তাআলা নিজে ভালমত জানা সত্বেও তার ফেরেশতাদের বলবেন: আমার এ বান্দার নামাজের প্রতি তাকাও। সে নামাজ পূর্ণ করেছে তা ত্রুটি করেছে? যদি সে তা পূর্ণ করে থাকে তার ব্যাপারে পূর্ণতা লেখে দাও। আর যদি সে ত্রুটি করে থাকে তাহলে তার নফল নামাজের প্রতি খেয়াল করো। তার নফল থেকে ফরজের অপূর্ণতা পূর্ণ করে দাও। এরপর তার সকল আমলই এভাবে মুল্যায়ন করা হবে। (বর্ণনায়: আহমাদ, আবু দাউদ। আলবানী রহ. হাদীসটিকে সহীহ বলেছেন।)
No comments:
Post a Comment